মোঃশাহিন আলম সিরাজগঞ্জ রিপোর্টার:  জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী ও রাজনৈতিক জীবনসঙ্গী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী আজ রবিবার। ১৯৩০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ইতিহাসে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেবল একজন সাবেক রাষ্ট্রনায়কের সহধর্মিণীই নন, বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের অন্যতম এক নেপথ্য অনুপ্রেরণাদাত্রী।

বাঙালি জাতির সুদীর্ঘ স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতিটি পদক্ষেপে তিনি বঙ্গবন্ধুকে সক্রিয় সহযোগিতা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর দৃঢ় চেতনাকে আরো শাণিত করেছিলেন এই মহীয়সী নারী। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও বিশিষ্টজনের কথা উঠে এসেছে। তাদের মধ্যে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নাম অগ্রগণ্য বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের পারিবারিক নাম রেণু। বঙ্গবন্ধুর বাল্যকালে বাবা-মা হারানো চাচাতো বোন রেণুর (বয়স মাত্র ৩ বছর) সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক করেন পরিবারের সদস্যরা। মিশনারি স্কুল থেকে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অল্প-বিস্তর প্রাথমিক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেন। এরপর আর পড়ালেখার সুযোগ হয়নি। কিন্তু তিনি ছিলেন একজন জ্ঞানী, বুদ্ধিদীপ্ত, বিচক্ষণ, দায়িত্ববান ও ধৈর্যশীল নারী। বঙ্গবন্ধুর জীবনে তার প্রভাব ছিল অপরিসীম।

বঙ্গবন্ধু তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন, ‘রেণু খুব কষ্ট করত, কিন্তু কিছুই বলত না। নিজে কষ্ট করে আমার জন্য টাকাপয়সা জোগাড় করে রাখত, যাতে আমার কষ্ট না হয়।’ আর এক জায়গায় লিখেছেন, ‘সে [রেণু] তো নীরবে সকল কষ্ট সহ্য করে, কিন্তু কিছু বলে না। কিছু বলে না বা বলতে চায় না, সেই জন্য আমার আরও বেশি ব্যথা লাগে। বঙ্গবন্ধু তার আত্মজীবনীতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব প্রসঙ্গে লিখতে গিয়ে গোপালগঞ্জ জেলগেটে কথোপকথন সম্পর্কে বলেন, “রেণু আমাকে যখন একাকী পেল, বলল, “জেলে থাকো আপত্তি নাই, তবে স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখো। তোমাকে দেখে আমার মন খুব খারাপ হয়ে গেছে। তোমার বোঝা উচিত আমার দুনিয়ায় কেউ নাই। ছোটবেলায় বাবা-মা মারা গেছেন  তোমার কিছু হলে বাঁচব কী করে?’ আমি বললাম, খোদা যা করেন তাই হবে, চিন্তা করে লাভ কী?” বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গমাতার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, “জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত (বঙ্গবন্ধুর) পাশে ছিলেন, যখন ঘাতকেরা আমার বাবাকে হত্যা করল, তিনি তো বাঁচার আকুতি করেননি।

তিনি বলেছেন, ‘ওনাকে যখন মেরে ফেলেছ, আমাকেও মেরে ফেল।’ এভাবে নিজের জীবনটা উনি দিয়ে গেছেন।” এভাবেই বঙ্গবন্ধুর জীবনের সুখ-দুঃখের সাথি হয়েই শুধু নয়, মৃত্যুতেও সাথি হয়েছিলেন তার সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিজ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শাহাদত বরণ করেন তিনি। বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাশাপাশি তাড়াশ উপজেলার কেন্দ্রীয় পার্টিঅফিসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাড়াশ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শ্রী সঞ্জীত কর্মকার এর উদ্যোগে ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ তাড়াশ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জনাব মোঃ ফরহাদ হোসেন বিদ্যুৎ এর সার্বিক সহযোগিতায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহ্ফিল পালন করা হয়। উক্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাড়াশ উপজেলা শাখার সকল নেতা কর্মী।

উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ তাড়াশ উপজেলা শাখার সকল নেতা কর্মী। ছাত্র লীগ নেতা কর্মী সহ আওয়ামী লীগের সকল অঙ্গ সহযোগী সংগঠন সহ উপস্থিত ছিলেন প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দু সহ সাধারণ জনতার একাংশ। উক্ত আলোচনা সভায়, আলোচিত হয় বঙ্গ মাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এর জিবনী নিয়ে তার জন্ম নিয়ে।সর্বশেষ তাহার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কেক কর্তন করা হয় ও তাহার বিদায়ী রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে দোয়ার মধ্যে দিয়ে আজকের আয়োজন শেষ করা হয়।